প্রকল্প – ২ ( একাদশ শ্রেণী )
প্রকল্প – ২ ( একাদশ শ্রেণী )
প্রকল্পঃ- বিদ্যালয়ের মধ্যে পরিচালিত যে কোন কার্যাবলী ( সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিতর্ক
প্রতিযোগিতা, যে কোন খেলাধুলা, প্রাতকালিন সম্মেলন
ইত্যাদি ) অথবা তোমার তুলনামূলক বিচারে অন্য কোন মাধ্যমিক/প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
পরিচালিত সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলীর পর্যালোচনা। (To organize any
activity within school ( cultural function, debate, any game, sports, morning
assembly etc. ) or to study on going co-curricular activities in another
secondary/primary school in comparison to your own. )
উপরে উল্লেখিত বক্তব্য অনুযায়ী নিম্নলিখিত
প্রকল্পগুলিকে, এক একটি প্রকল্প হিসাবে নির্বাচন করা যেতে পারে-
১) বিদ্যালয়ে পরিচালিত সাংস্কৃতিক
কার্যাবলী।
২) বিদ্যালয়ে পরিচালিত কোন প্রাতকালিন
সম্মেলন।
৩) অন্য কোন মাধ্যমিক/প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিচালিত
সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলীর পর্যালোচনা।
নির্বাচিন প্রকল্পের
বিষয়ঃ- বিদ্যালয়ে
পরিচালিত
সাংস্কৃতিক কার্যাবলী (Cultural Function within school)।
প্রথম অধ্যায়
ভূমিকাঃ-
জগতে
যা কিছু ভালো বা যা কিছু সুন্দর ঘটনা ঘটে চলেছে তার চর্চা বা অনুশীলন করাই হল
সংস্কৃতি বা Culture বা কৃষ্টি। সংস্কৃতি চর্চার উদ্দেশ্যে যে সকল
কার্যাবলী নির্ধারণ এবং নির্বাচন করা হয়ে থাকে তাদের বলে সাংস্কৃতিক কার্যাবলী।
যেমন- স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম দিবস উৎযাপন, রবীন্দ জন্ম জয়ন্তী
উৎযাপন ইত্যাদি। বর্তমান তথা আধুনিক শিক্ষায় সংস্কৃতিক কার্যাবলী উৎযাপনের গুরুত্ব
অপরিসীম। এই ধরণের কার্যাবলী উৎযাপন শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার
একঘেয়েমি দূর করতে সাহায্য করে।
বর্তমান শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ে
প্রকল্প রুপায়নের ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ে পরিচালিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান “জন্ম শতবর্ষে
স্বামীজি বন্দনা”।
প্রকল্পের বিষয়ঃ- সুতরাং, আমাদের প্রকল্পের বিষয় হয়েছে-“জন্ম শতবর্ষে
স্বামীজি বন্দনা”।
প্রকল্পের
উদ্দেশ্যঃ- আলোচ্য প্রকল্পের
উদ্দেশ্যগুলি হল-
১) সকল শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতিক মনস্ক করে গড়ে তোলা।
২) শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার একঘেয়েমি দূর
করা।
৩) স্বামীজির জীবনদর্শনকে শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরা।
৪) বর্তমান সকল শিক্ষার্থীদেরকে স্বামীজির আদর্শে উদ্বুদ্ধ
করা।
প্রকল্প রুপায়নের
পরিকল্পনাঃ- আলোচ্য প্রকল্পটি
রুপায়নের উদ্দেশ্যে শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক/শিক্ষিকার নির্দেশে স্বামীজির
জন্মদিবস উৎযাপনের দিনটিতে অর্থাৎ, ১২ ই জানুয়ারি প্রথম
থেকে শেষ পর্যন্ত আমরা যা যা করেছিলাম তা লিপিবদ্ধ করার পরিকল্পনা স্থির করি।
দ্বিতীয় অধ্যায়
তথ্য সংগ্রহঃ- উক্ত দিনে অর্থাৎ, স্বামীজির জন্মদিবস
উৎযাপনের দিনে ( ১২ ই জানুয়ারি ) যে সকল ঘটনা ঘতেছিল—
# সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান “স্বামীজির জন্মদিবস পালন” এর শুভ সূচনায়
সঞ্চালক, ................................( সঞ্চালকের নাম )
মহাশয় অনুষ্ঠানের সভাপতি হিসাবে ......................................(
বিদ্যালয়ের নাম ) এর প্রধান শিক্ষক ........................( প্রধান শিক্ষকের নাম
) এর নাম প্রস্তাব করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সহকারী প্রধান শিক্ষক
......................( সহকারী প্রধান শিক্ষকের নাম ) মহাশয় সঞ্চালকের প্রস্তাবকে
সমর্থন করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন বিদ্যালয়ের সহকারী
শিক্ষক ...........................( সঞ্চালক শিক্ষকের নাম )।
# সভাপতি নিজের আসন
গ্রহণ করেন এবং সঞ্চালক অনুষ্ঠানটি এগিয়ে নিয়ে যেতে আরম্ভ করেন।
# প্রথমে স্বামী বিবেকানন্দ, ঠাকুর শ্রী শ্রী
রামকৃষ্ণকে দেখে যে প্রণাম মন্ত্র লিখেছিলেন সেটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকল
শিক্ষার্থীদের কর্তৃক গাওয়া হয়। মন্ত্রটি হল-
ওঁ স্থাপকায় চ
ধর্মস্য সর্বধর্ম স্বরূপিনে ।
অবতার বরিষ্ঠায়
রামকৃষ্ণায় তে নমঃ।।
# এর পর বিবেকানন্দ, শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ এবং সারদা
মায়ের গলায় মাল্যদান করা হয়। পরে প্রদীপ প্রজ্বলিত করা হয়। প্রদীপ প্রজ্বলনের পর
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকলে বিবেকানন্দ রচিত রামকৃষ্ণ বন্দনাটি পাঠ করেন।
রামকৃষ্ণ বন্দনাটি হল—
খন্ডন ভব-বন্ধন, জগ-বন্দন
বন্দি তোমায় ।
নিরঞ্জন, নর-রূপ
ধর, নির্গুন গুনময় ।।
মোচন অঘদূষণ, জগভূষণ, চিদঘনকায়
।
জ্ঞানাঞ্জন-বিমল-নয়ন, বীক্ষনে
মোহ যায় ।।
ভাস্বর ভাব-সাগর, চির-উন্মদ-প্রেম-পাথার
।
ভক্তার্জন-যুগল চরণ, তারণ-ভব-পার
।।
জৃম্ভিত-যুগ-ঈশ্বর, জগদীশ্বর, যোগসহায়
।
নিরোধন, সমাহিতমন
নিরখি তব কৃপায় ।।
ভঞ্জন-দুঃখগঞ্জন, করুণাঘন, কর্ম-কঠোর
।
প্রাণার্পণ, জগত-তারণ, কৃন্তন-কলিডোর
।।
বঞ্চন-কামকাঞ্চন, অতিনিন্দিত-ইন্দ্রিয়রাগ
।
ত্যাগীশ্বর, হে
নরবর ! দেহপদে অনুরাগ ।।
নির্ভয়, গতসংশয়, দৃঢ়নিশ্চয়-মানসবান্
।
নিষ্কারণ-ভকত-শরণ, ত্যজি
জাতি-কুল-মান ।।
সম্পদ তব শ্রীপদ
ভব-গোষ্পদ-বারি যথায় ।
প্রেমার্পণ, সমদরশন, জগজন-দুঃখ
যায় ।।
নমো নমো প্রভু
! বাক্য-মনাতীত, মনোবচনৈকাধার ।
জ্যোতির জ্যোতি
উজল-হৃদিকন্দর তুমি তম-ভঞ্জন হার ।।
ধে ধে ধে লঙ্গ
রঙ্গ ভঙ্গ, বাজে অঙ্গ সঙ্গ মৃদঙ্গ, গাহিছে
ছন্দ ভকতবৃন্দ,আরতি তোমার ।।
জয় জয় আরতি তোমার, হর
হর আরতি তোমার, শিব শিব আরতি তোমার॥॥
# এর পর স্বামীজির সংক্ষিপ্ত জীবন ও দর্শন নিয়ে কথা
বলে একাদশ শ্রেণীর ছাত্র (.........ছাত্রের নাম.........)।
# এর পর স্বামীজির দেওয়া শিক্ষার সংজ্ঞা, শিক্ষার
লক্ষ্য এবং শিক্ষকের ভূমিকা সম্বন্ধে বলে একাদশ শ্রেণীর অপর একটি ছাত্র
(.......ছাত্রের নাম......)।
# এরপর চিকাগোর ধর্ম মহাসম্মেলনে স্বামীজি যে
মহামূল্য বক্তব্য রেখেছিলেন তা পাঠ করে শোনায় একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী
(.......ছাত্রীর নাম......)।
# এর পর স্বামীজির কিছু বানী পাঠ করে শোনায় দ্বাদশ
শ্রেণীর ছাত্র বিনয় রায়।
বিনয় রায় এর
পাঠটি নিচে তুলে ধরা হল—
মঞ্চে উপস্থিত পরম পূজনীয় সভাপতি ও অন্যান্য সকল গুণীজনদের
শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি বিনয় রায় স্বামী বিবেকানন্দের কিছু বানী সকলের সামনে তুলে ধরছি—
(১) “টাকায় কিছুই হয় না, নামেও হয় না, যশেও হয় না, বিদ্যায় কিছু হয়
না, ভালোবাসায় সব হয়—চরিত্রই বাধা বিঘ্নের বজ্র দৃঢ় প্রাচীরের মধ্য দিয়ে
পথ করে দিতে পারে”।
(২) “হে বীর হৃদয় যুবকগন, তোমরা বিশ্বাস কর যে,
তোমরা বড় বড় কাজ করার জন্য জন্মেছ।
ওঠো জাগো, আর ঘুমিয় না, সকল অভাব,
সকল দুঃখ ঘোচাবার শক্তি তোমাদের ভিতরেই আছে,
একথা বিশ্বাস কর তাহলেই ঐ শক্তি জেগে উঠবে”।
(৩) “ বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর।
জীবে প্রেম করে যেইজন, সেইজন সেবিছে ঈশ্বর”।
(৪) “May I be born again and again in order to serve
the poor, the down trodden and the suffering. My God the poor, My God the
wicked, My God the miserable of all races and species – is the only object of
my worship”.
(৫) “ হে ভারত, ভুলিও না – তোমার নারী
জাতীর আদর্শ সীতা, সাবিত্রী, দময়ন্তী; ভুলিও না—তোমার উপাস্য
উমানাথ সর্বত্যাগী শঙ্কর; ভুলিও না – তোমার বিবাহ তোমার ধন, তোমার জীবন
নিজের ইন্দ্রিয় সুখের জন্য বা ব্যক্তিগত সুখের জন্য নহে। ভুলিও না -- তুমি জন্ম
হইতেই মায়ের জন্য বলি প্রদত্ত। ভুলিও না -- তোমার সমাজ, সে বিরাট, মহামায়ার
ছায়ামাত্র। তুমিও কটিমাত্র বস্তাবৃত হইয়া, সদর্পে তাকাইয়া বল—ভারতবাসী আমার
ভাই, ভারতবাসী আমার প্রাণ, ভারতের দেবদেবী আমার ঈশ্বর, ভারতের সমাজ
আমার শিশু শয্যার ও আমার যৌবনের উপবন, আমার বার্ধক্যের
বারানসী। বল ভারতের মৃত্তিকা আমার সর্গ, ভারতের কল্যাণ আমার
কল্যাণ; আর বল দিন-রাত, “হে গৌরীনাথ, হে জগদম্বে, আমায় মনুষ্যত্ব
দাও, মা আমার দুর্বলতা, কাপুরুষতা দূর করো, আমায় মানুষ করো”।
(৬) “আপনাতে বিশ্বাস রাখো।
প্রবল বিশ্বাসই বড় কাজের জনক”।
# এর পর বিবেকানন্দের মতে কর্মযোগ কী ? – তা পাঠ করে
শোনায় একাদশ শ্রেণীর ছাত্র আনন্দ সাহা।
# সবশেষে, বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ......( সভাপতির
নাম )......।
তথ্য বিশ্লেষণঃ-
স্বামীজির জন্ম বার্ষিকী উৎযাপন অনুষ্ঠানের প্রাপ্ত তথ্য
গুলিকে বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে –
১) স্বামীজির জীবনী সম্পর্কে আলোচিত হয়েছে।
২) তিনি ছিলেন একজন শিক্ষা দার্শনিক। তার মতে শিক্ষা কি ? শিক্ষার লক্ষ্য
কি হবে ? শিক্ষকের ভূমিকা কি হবে ? – এগুলি
অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সকল শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।
৩) চিকাগো ধর্ম মহাসম্মেলনে স্বামীজি যে ভাষণ দিয়েছিলেন
সেটা সর্ব সমক্ষে পাঠ করা হয়েছে।
৪) অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীদের সামনে স্বামীজির
বানী তুলে ধারা হয়েছে।
৫) স্বামীজির কর্মযোগ সম্পর্কে সকলের কাছে অলোচনা করা
হয়েছে।
সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ-
উক্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে –
# আমরা অর্থাৎ, সকল ছাত্র-ছাত্রী স্বামী
বিবেকানন্দের জীবন ও বানীর সঙ্গে বিস্তারিত ভাবে পরিচিত হয়েছি।
# আমরা স্বামী বিবেকানন্দের প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়েছি।
# সমগ্র অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমরা স্বামী বিবেকানন্দের
জীবনাদর্শকে সকল শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছি।
তৃতীয় অধ্যায়
সীমাবদ্ধতাঃ-
উক্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বামীজির জীবনের সকল ঘটনা
শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরা সম্ভব হয়নি।
সহায়ক
গ্রন্থপুঞ্জিঃ- আলোচ্য প্রকল্পটি রুপায়নের জন্য যে সকল
গ্রন্থপুঞ্জির সাহায্য নেওয়া হয়েছে, সেগুলি হল-
১) ঘোড়াই নিমাই চাঁদ, উচ্চমাধ্যমিক
শিক্ষাবিজ্ঞান, এ.বি.এস. পাবলিশিং হাউস, কলিকাতা, ২০১৫-১৬।
২) রায় সুশীল, আধুনিক শিক্ষার
পটভূমি, সোমা বুক এজেন্সি, কলিকাতা, ২০১৫।
৩) ডঃ পাল দেবাশিস এবং ডঃ
সাহু সুশান্ত কুমার, প্রশ্নোত্তরে শিক্ষাবিজ্ঞান, ছায়া প্রকাশনী, কলিকাতা, ২০১৫।
৪) ডঃ রায় সুভাষ চন্দ্র, উচ্চমাধ্যমিক
শিক্ষাবিজ্ঞান, সাঁতরা পাবলিকেশন প্রাঃ লিঃ, কলিকাতা, ২০১৭।
nice
ReplyDeleteTHANK YOU
ReplyDelete